• বিভাগঃ রাজশাহী
  • জেলাঃ নওগাঁ
  • উপজেলাঃ পত্নিতলা

এক পুত্র আর এক কন্যা নিয়ে জল্পনা রানি কর্মকারের সংসার, বয়স ৪০। তার উপার্জনে অক্ষম অসুস্থ স্বামী যেন থেকেও নেই। নিজস্ব কোন জমি বা বসতভিটা না থাকায় বছর দুয়েক আগেও পরিবার নিয়ে থাকতেন পার্শ্ববর্তী কাঞ্চন গ্রামের আফজাল হোসেনের অনাবাদি একখণ্ড জমিতে, খড়ের ছাউনি দেওয়া একমাত্র ঘরে। দুটি ছেলেমেয়েকে পড়াশোনা করাতে পারেনি অর্থাভাবে। তার স্বামী ছিল কৃষি শ্রমিক যার সামান্য আয়ে চার সদস্যের পরিবার অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাত। স্বামীর অসুস্থতার সাথে সাথে দুর্ভাগ্য আরো বেশি চেপে বসে যখন তাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল জমিটিকে জমির মালিক বিক্রি করে দেয়। এরপর একটি খাস পুকুরের পাড়ে ঝুপড়ি ঘর করে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নেয় জল্পনা।গৃহহীন থাকায় তরুণী কন্যা জান রানি কর্মকারের বিবাহ দেয়াড় চেষ্টা বারবার ভেস্তে যায়। একপর্যায়ে অর্থাভাবে ইটভাটায় দিনমজুরি করত জল্পনা আর তার ছোট ছেলে দীপক। দৈন্যদশায় মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। তবে ভাগ্যবিধাতা তাদের দিকে মুখ তুলে তাকান যখন পত্নীতলা উপজেলার ভূমিহীন-গৃহহীন তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়, আর তারই ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনন্য মানবিক উদ্যোগ আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় তারা মুজিববর্ষে নজিপুর পৌর এলাকায়২ শতক জমিসহ সেমি পাকা ঘর পায়। যার বাজার মূল্য জমিসহ পাঁচ লক্ষ টাকা প্রায়। এরপর জল্পনাকে আর কারো মুখাপেক্ষী হতে হয়নি। এখন সে নিজ বাড়ি সংলগ্ন জায়গায় সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশু পালন করেন। পুত্র দীপক স্থানীয় পৌর এলাকায় মোটর মেকানিকের কাজ করে।দুজন মিলে এখন মাসে প্রায় ২০,০০০/- টাকা আয় করেন। তার বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই, বিশুদ্ধ পানির নলকূপ আছে। জল্পনা বলেন, নিজের একটি ঠিকানা থাকায় সমাজে তাদের মর্যাদা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে, মনের জোরও বেড়েছে। ইতিমধ্যে জল্পনার মেয়ে জান রাণীর বিয়ে হয়েছে রাজশাহী জেলায়। জল্পনা এখন অনেকটা নিশ্চিন্তে নিজের বাড়িতে ঘুমাতে পারে। সে বিশ্বাস করে সবটাই সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক অবদানে।