• বিভাগঃ খুলনা
  • জেলাঃ কুষ্টিয়া
  • উপজেলাঃ দৌলতপুর

কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের ৫৫ বছর বয়সী অসহায় বিধবা রেহেনা খাতুন একমাত্র সন্তান রাজনকে নিয়ে বৃষ্টির পানি পড়া ভাঙ্গা পরিত্যক্ত মাটির ঘরে ৩০০/=(তিনশত টাকা) ভাড়া দিয়ে বসবাস করতেন। তার ছোট্ট ছেলের আহারের সন্ধানে বিরামহীন পরিশ্রমী কৃষ্ণ বর্ণের রেহেনা বুড়ি হয়ে গেছে। ঘর ভাড়া দেওয়ার সময় হলেই, ঘর মালিকের সাথে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। ভাড়া না পেয়ে ঘর মালিক বের করে দিতে চাইলে নিরুপায় রেহেনা ঘর মালিকের হাতেপায়ে ধরে আবার বসবাস করে। এভাবে চলতে থাকে মাসের পর মাস,বছরের পর বছর। অর্থ কষ্টের মধ্যে বড় হয়ে ওঠা একমাত্র ছেলে অসহায় মায়ের দুঃখ, কষ্ট, অপমান সহ্য করতে না পেরে কষ্ট-যন্ত্রনা বুকে নিয়ে চলে যায় ঢাকায়, কাজের সন্ধানে। থেমে যায় তার মাধ্যমিকের পড়ালেখা এবং একই সাথে থেমে যায় পড়ালেখা করে ভালো চাকরি করে মায়ের দুঃখ কষ্ট ঘোচানোর স্বপ্ন। ইতোমধ্যে কপালে বয়সের ভাজ পড়া কালো বর্ণের রেহেনা সারাদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে ক্লান্ত শরীরেই খেয়ে-না -খেয়ে শুয়ে পড়ে ছেলের দূরে চলে যাওয়ার শোকে কেঁদে কেঁদে চোখের নিচে কালো দাগ পড়া মায়ের রাত গভীর হয়ে ওঠে,তবে রাত যত গভীর হয় আশার আলো ভোরের কাঁধে ভর করে রেহেনার দিকে ধেয়ে আসে। অবশেষে, ২০২১ সালে মুজিব বর্ষের প্রায় ,০০,০০০/=( আটলক্ষ) টাকা মূল্য মানের শতক খাস জমির উপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আধা-পাকা বাড়ি পায় রেহেনা খাতুন। এরপর থেকে তিনি দেখতে থাকেন সুখের স্বপ্ন তার স্বপ্নকে প্রকৃতি যেন শিমুল ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। এখন সে সেলাই মেশিনে কাজ করে প্রতিদিন ২০০/= থেকে ৩০০/= টাকা আয় করে। মেশিনের প্রতিটি টকটক শব্দ যেন তার নীরব গানের বাজনা এবং তার সামাজিক ভাবে স্বাবলম্বী দারুণ সুখী জীবনের প্রতিচ্ছবি। সুখী রেহেনা তার একমাত্র ছেলের বিয়ে দিয়ে নাতি-নাতনি নিয়ে জীবনের বাকি দিনগুলো সুখে পার করার স্বপ্ন বুনছে।