• বিভাগঃ ঢাকা
  • জেলাঃ গাজীপুর
  • উপজেলাঃ কালীগঞ্জ
  • পৌরসভা/ইউনিয়নঃ তুমুলিয়া
খাদিজা বেগমের বর্তমান বয়স ৩৭, আদি ঠিকানা বাগেরহাট। ২০০৭ সালে সিডর কেড়ে নেয় তাদের ঘর-বাড়ি, সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যায় সকল সহায়-সম্পত্তি । তারপর নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ছোট ভাই সমেত ভাগ্যের চাকা এসে থামে গাজীপুরের কালিগঞ্জে ।
এ~বাড়ি ও~বাড়িতে কাজ করেই বছর কয়েক পাড় হয়। এক সময় গার্মেন্টস এ দিন মজুরের চাকরি হয়। নিজের আয় দিয়ে ছোট ভাইকে পড়াশুনা করার চেষ্টা করে। কিন্তু বাধ্য হয়েই মাঝপথে থেমে যেতে হয়। এরই মধ্যে খাদিজা তার গার্মেন্টসে এক সহকর্মীর সাথে বিবাহ বন্ধনেও আবদ্ধ হয়। কিছু দিনের মধ্যেই তাদের একটি মেয়ে সন্তান হয়। সবকিছু একরকম ভালই চলছিল, কিন্তু কপাল ফিরেও যেন ফিরল না খাদিজার। দ্বিতীয় সন্তানটি (ছেলে) জন্ম নিল সম্পূর্ণ প্রতিবন্ধী হয়ে। তিল তিল করে জমানো দুজনের সকল সঞ্চয় সন্তানের পেছনে ব্যয় করে নিস্ব হয়ে যায়। এমতাবস্থায় যখন মানসিকভাবে হতাশার চূড়ায় তখনই আশ্রয়ণের ঘর যেন এক চিলতে আশা নিয়ে এল। তুমুলিয়া ইউনিয়নের সোমবাজার আশ্রয়ণ প্রকল্পে দুই শতাংশ জমিসহ একটি দৃষ্টিনন্দন ঘরের মালিক হয়।
এদিকে স্বামীও ইস্পাহানি কোম্পানিতে ভাল বেতনে চাকরি স্থানান্তর করেছেন এবং তাদের আরও একটি সুস্থ-স্বাভাবিক মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। প্রতি মাসে বাড়ি ভাঁড়ার টাকা পরিশোধের ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়ায় খাদিজা চাকরি ছেড়ে সন্তানদের পড়াশুনা ও লালন-পালনের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। চাকরি ছাড়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই খাদিজা বলেন, “ঘরের মালিক হইছি, আর কি চাই! এখন সন্তানদের সাথে সময় দিতা পারতাছি, এইডাই বেশি ভাল্লাগে। আমার টেকার দরকার নাই, যে দুইজন মাইয়া লেখাপড়া করতাছে তারা শিক্ষিত হয়ে নিজের পায়ে দাড়াইতে পারলেই হইল।”
অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল এভাবেই নারীর আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদাবোধ অর্জনে ভূমিকা পালন করছে এবং বদলে দিয়েছে খাদিজা বেগমের মতো অসংখ্য নারীর জীবন।