• বিভাগঃ ঢাকা
  • জেলাঃ গোপালগঞ্জ
  • উপজেলাঃ গোপালগঞ্জ সদর
  • পৌরসভা/ইউনিয়নঃ উলপুর

গোপালগঞ্জ জেলার করপাড়া ইউনিয়নের পদ্মবিলা গ্রামে চরম হত দরিদ্র দিনমজুর মোঃ আঃ রহমান পিতাঃ মোঃ হারুন- অর-রশিদ বাস করতেন। ছোট কুঁড়ে ঘরে দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তান এবং স্ত্রীকে নিয়ে আর্থিক অসচ্ছলতায় কোনরকম দিনাতিপাত করছিলেন। নিদারুণ কষ্টের মাঝেও একটু শান্ত¡না পেতেন যদি পায়ের নিচের মাটির মালিকানাটি নিজের হতো। কিন্তু ঐ কুঁড়েঘরের জায়গাটিও যে পরের। এক মহৎ হৃদয়বান ব্যক্তি দয়ার বশবর্তী হয়ে বাড়ীর এক কোনে তাকে ও তার পরিবারকে একটি কুঁড়ে ঘর তুলে আশ্রয় দেন। দুঃখী মোঃ আঃ রহমার এর দুঃখের শুরু হয় যখন তার আড়াই বছর বয়সে তার মা তাকে ছেড়ে চির বিদায় নেন। তার মা মারা যাবার কিছুদিন পরেই তার বাবা পুনঃরায় বিয়ে করেন। সৎ মায়ের অভাবের সংসারে আর মোঃ আঃ রহমান এর ঠাঁই হয়নি। কৈশর থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত সে তার নানা-নানীর কাছেই দারিদ্রতার মাঝে বড় হয়েছে। বড় হয়ে ঢাকায় সে নির্মাণ কাজের শ্রমিক হিসাবে কাজ করেছে। কিন্তু রাজধানীতে তার স্বল্প আয় দিয়ে পরিবার নিয়ে বসবাস করা আর সম্ভব হয়ে ওঠে না বিধায় ৫/৬ বছর পূর্বে সপরিবারে নিজ জেলায় চলে এসে ওঠেন ঐ হৃদয়বান ব্যক্তির আশ্রিত কুঁড়েঘরে। একদিন তার মতো কয়েকজন নির্মান শ্রমিকের সাথে বসে গল্প করতে গিয়ে জানতে পারেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে জমি ও ঘর প্রদান করবেন। সাথে সাথে সে উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে ভূমিহীন হিসাবে একটি আবেদন করে এর কিছুদিন পরে উলপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস হতে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এসে সে প্রকৃত ভূমিহীন কিনা সে সম্পর্কে খোজ খবর নেয় এবং তার কিছুদিন পরে সে জানতে পারে তার নামে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে নির্মিত করপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পে একটি ঘর বরাদ্দ হয়েছে, সেই সাথে দুই শতাংশ জমি। ভূমিহীন দিনমজুর মোঃ আঃ রহমান আজ তার নিজের নামে দলিল রেজিষ্ট্রি করা একান্ত নিজের জমিতে নিজের ঘরে বাস করে। মা হারা মোঃ আঃ রহমান পেছনের সব কষ্টগুলো নিমিষেই ভুলে যায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই অসামান্য উপহার নিমিষেই তার মনের সব কষ্টগুলোকে যেন একটি সংগ্রামী শক্তিতে রুপান্তরিত করে। নিজের ঘর সংলগ্ন জায়গায় সে ও তার স্ত্রী হাস মুরগী লালন পালন করে আর শাক-সবজি তারা নিজেরাও খায় আবার প্রতিবেশীদেরও দেয়। ঘরবাড়ী ছিলনা বলে সমাজে মোঃ আঃ রহমান এর পূর্বে কোন মর্যাদা ছিল না। এখন সে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সাথে সাথে সমাজে প্রাপ্য সম্মানের অধিকারী হয়েছে। নিজে এক খন্ড জমির মালিক হয়েছে বলে এসব সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে সে ও তার পরিবার আজ উচ্ছ্বাসিত ও আনন্দিত। বর্তমানে দিনমজুর মোঃ আঃ রহমান পেছনের কষ্ট ভুলে সুখ শান্তিতে দিন কাটাচ্ছে।