- বিভাগঃ ময়মনসিংহ
- জেলাঃ ময়মনসিংহ
- উপজেলাঃ ফুলবাড়ীয়া
- পৌরসভা/ইউনিয়নঃ এনায়েতপুর
1. উপকারভোগীর বর্ণনা: (নাম/বয়স/স্বামী/স্ত্রী/সন্তানের
সংক্ষিপ্ত বর্ণনা..) নামঃ-মোছাঃ জুলেখা খাতুন (৩৫), স্বামী পরিত্যাক্তা, গ্রামঃ- কাহালগাঁও, সন্তানঃ মেয়ে ১ জন চতুর্থ শ্রেণিতে
পড়ে।
2. উপকারভোগীর পূর্বের অবস্থায় কেমন ছিলেন:
মুজিববর্ষে উপলক্ষ্যে 2 শতক জমিসহ সেমি পাকা ঘর পাওয়ার আগে উপকারভোগী কেমন ছিল তার
সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: জুলেখা পিতা মাতার প্রথম
সন্তান, ছোট বোন কিছুটা মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন থাকায় এবং কোন ভাই না থাকায় সমাজের
চাপে বয়স আঠার পূর্ন হবার আগেই পাত্রস্থ করে পাশের গ্রামের এক বেকার ছেলের সাথে। জুলেখার
পিতা লেবুর বাগানে কাজ করে। নিজেদের কোন জমি নেই। ভাইয়ের জায়গায় ঘর তুলে বসবাস করে।
জুলেখা বছর না ঘুরতেই কন্যা সন্তানের মা হয়। নিজের ভাই না থাকা এবং কন্যা সন্তান জন্ম
দেওয়ায় জুলেখার স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ীর লোকজন তার পিতা মাতাকে দোষারোপ করে থাকে নানা
অজুহাতে এবং যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। দিন যত যায় নির্যাতনের মাত্রা ততই বাড়তে থাকে।
এক সময় অসহ্য হয়ে স্বামীর বাড়ী ত্যাগ করে পিতা মাতার কাছে ফেরত আসে। জমি বেদখল হবার
ভয়ে জুলেখার পিতাকে তার চাচা তার জায়গা ফেরত দেবার জন্য ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে। দিন
দিন জীবন যাপন তাদের জন্য অসহনীয় হয়ে যায়। অনেকে তার কন্যাকে দত্তক দিয়ে জুলেখাকে পুনরায়
বিয়ে দিতে তার বাবাকে পরামর্শ দিতে থাকে। তার বাবা পুনরায় মেয়েকে অন্য কোন নির্যাতনকারীর
হাতে তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। নানান অপমান
সমাজের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দিন যাপন করতে থাকে।
3. উপকারভোগীকে বরাবদ্দকৃত 2 শতাংশ জমির বর্তমান
বাজার মূল্য: আনুমানিক 2,00,000/- (দুই লক্ষ) টাকা।
4. ঘর পেয়ে তিনি/তাঁর পরিবার বর্তমানে কেমন
আছেন: মুজিব উপলক্ষে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী
ভূমিহীন এবং গৃহহীন মানুষকে ঘর দিবে জেনে স্থানীয় যুবক কামরুলের মাধ্যমে ঘরের জন্য
আবদেন করেন। সমস্ত যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া শেষে 02 (দুই) শতাংশ জমিসহ মাননীয় প্রধান
মন্ত্রীর উপহার ঘর প্রথম পর্যায়েই পায়।
“ক”
শ্রেণির ঘর পাবার পর পিতা মাতা কন্যাকে এবং কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন বোনকে নিয়ে নতুন
ঘরে বসাবাস শুরু করে। ঘর পাবার পর মাথা যোগার ঠাঁই হওয়ায় সে যেন তার আত্মবিশ্বাস ফিরে
পায়। কন্যাকে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছে। মানুষের বাড়িতে কাজ করে জমানো
টাকা মায়ের হাতে তুলে দিয়ে নিজে গার্মেন্টেসে চাকুরী নিয়েছে।
এক
বছর পর জুলেখার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল পিতা মাতাকে টেলিভিশন, ফ্রিজ কিনে দিয়েছে। দুপুরে
খাবার পর নাতনীকে নিয়ে টেলিভিশন দেখতে দেখা যায়। জুলেখার পিতা জানায় তার কন্যা তাকে
লেবুর বাগানে কাজ করতে মানা করেছে। প্রত্যেক মাসের শুরুতে পরিবারের ভরণ পোষণের টাকা
পাঠায় জুলেখা। ছেলে না থাকার কারণে সমাজের মানুষের কাছে চান মিয়াকে অনেক কথা শুনতে
হয়েছে। সেই কন্যার জন্যই সে আজ সুখী জীবন পার করছে। তা তার চোখের ঝলকানি দেখেই বোঝা
যায়।