• বিভাগঃ রাজশাহী
  • জেলাঃ পাবনা
  • উপজেলাঃ সুজানগর
  • পৌরসভা/ইউনিয়নঃ ভায়না

পাবনার সুজানগরের হেমরাজপুর আশ্রয়ণ কেন্দ্রের এক বাসিন্দার নাম রিক্তা বেগম। এক সময়ে সমাজে এই রিক্তা বেগমের পরিচয় ছিল ভূমিহীন ছিন্নমূল মানুষ হিসেবে। সে সময় তার স্থায়ীভাবে মাথা গোঁজার কোন ঠাঁই ছিলনা। তখন তিনি তার বেকার স্বামী ঝন্টু শেখ এবং এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে কখনও মুজিব বাঁধের পাশে আবার কখনও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করতেন। কিন্তু ২০২১ সালে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রথম পর্যায়ে ওই আশ্রয়ণ কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের ০২ শতাংশ নিষ্কণ্টক জমি ও ১টি সেমিপাকা ঘর পেয়ে তার ভাসমান জীবনের অবসান ঘটে। সেই সঙ্গে তার জীবন থেকে মুছে যায় ভূমিহীন জীবনের গস্নানি। এবার ভূমিহীন দুর্বিষহ জীবনের গস্নানি মুছে যাওয়ার পর তিনি স্বাবলম্বী হওয়ার সংগ্রামে মরিয়া হয়ে উঠেন। আসলে মন মননে আত্ম প্রত্যয়ী হলে স্বাবলম্বী হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। আর তাইতো রিক্তা বেগমের যে কথা সেই কাজ। এক পর্যায়ে তিনি স্থানীয় একটি বে-সরকারি সংস্থা থেকে কিছু ঋণ নিয়ে স্বামী ঝন্টু শেখকে একটি ভ্যান কিনে দেন এবং নিজে পার্শ্ববর্তী কুড়িপাড়া গ্রামের একটি তাঁতী পলস্নীতে লুঙ্গি তৈরীর সুতা মুড়ানোর কাজে যোগ দেন। শুধু তাইনা স্বাবলম্বী হতে এর বাইরেও অবসর সময়ে তিনি বাড়িতে বসে চড়কায় সুতা মুড়ানোর কাজ করেন। এভাবে মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে স্বামীর ভ্যান চালানো উপার্জন আর তার সুতা মুড়ানোর উপার্জনে সত্যই তাদের জীবনে স্বাবলম্বী হওয়ার ছোঁয়া লাগে। আশ্রয়ণবাসী রিক্তা বেগম বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের ওই ঘর পাওয়ার আগে আমি স্বামী সমত্মানদের নিয়ে কখনও মুজিব বাঁধের পাশে আবার কখনও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে ভাসমান মানবেতর জীবন যাপন করেছি। এমনকি ঠিক মতো দুবেলা দু’মোঠা খাবারও যোগাড় করতে পারিনি। কিন্তু ওই জমি ও ঘর পাওয়ার পর জীবনের মোড় ঘুরে গেছে। একদিকে আমাদের জীবন থেকে মুছে গেছে ভূমিহীনের গস্নানি, অন্যদিকে আমরা স্বামী-স্ত্রী দু’জন মিলে উপার্জন করে দারিদ্রতাকে  পিছে ফেলে স্বাবলম্বী হতে চলেছি। সেই সঙ্গে ছেলে-মেয়েদেরকে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া শেখানোর সুযোগ পেয়েছি। সবমিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ওই উপহারের জমি এবং ঘর আমার জীবনে আর্শীবাদ স্বরূপ। সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দারা যাতে সম্মানজনকভাবে বেঁচে থাকতে পারেন সে জন্য তাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারি যেকোন সাহায্য সহযোগিতা অগ্রধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাদের সমত্মানদের লেখা-পড়ার বিষয়েও উপজেলা প্রশাসন খোঁজ-খবর রাখেন।