• বিভাগঃ রংপুর
  • জেলাঃ নীলফামারী
  • উপজেলাঃ সৈয়দপুর
  1. সকালের নরম রোদে নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রথমবারের মতো গিয়েই অনুভবে একরাশ ভালোলাগা টের পেলাম।সোহাগীর সাথে দেখা হওয়ার পর এ ভালোলাগা অন্য মাত্রা পেলো। ঘরের পাকা বারান্দায় শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে কৌতুহলী দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।জিজ্ঞাসা করলাম -কেমন আছেন? একটু বিচলিত মনে হলো তাকে । কোন কথা বলছিলোনা সে। আবারো জিজ্ঞাসা করলাম কেমন আছেন? এবার তিনি উঠে দাঁড়ালেন । ভাবলাম লজ্জা পেয়েছে। একটি ছেলে এগিয়ে এসে বললো - ও তো কথা বলতে পারে না। কিছুটা অপ্রস্তুত হলেও ইশারায় সোহাগীকে বসতে বললাম। সেও বোধহয় আমাকে বুঝতে শুরু করেছে। প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে সোহাগী সম্পর্কে অনেক কিছু জানা গেলো। জন্ম থেকেই বাকপ্রতিবন্ধী সে। হতদরিদ্র পিতার সংসারে চরম অভাবে তার বেড়ে উঠা । কখনো রেললাইনের পাশে পলিথিনের ঝুপড়ি কিংবা অন্যের জায়গায় ভাঙা ঘরকে যদি সংসার বলা যায় তবে সে অর্থে সংসারই হয়তো সোহাগীদের ছিল। জন্ম থেকে জ্বলছি-র এক দুঃখী সংস্করন এই সোহাগী। প্রতিবন্ধী সোহাগীর একদিন বিয়ে হয় সেলুন কর্মী আরমানের সাথে। সোহাদীদের যুগল জীবনে আনন্দের উপলক্ষ হয়ে এক পুত্র সন্তানও আসে । তিন পুরুষ ধরে ঘরহীন ঘরে জন্ম নেওয়া শিশুটিও কি ছাদহীন পৃথিবীতে বসবাস করবে ? এ ভাবনায় অস্থির ছিল আজন্ম বাকপ্রতিবন্ধী সোহাগী। তবে এখন সে দুই শতক জমি এবং সেমিপাকা ঘরের মালিক। সৈয়দপুর বিমানবন্দরের অতি নিকটে চিকলি বাজারের পাশেই এখন তার বসতি। স্থানীয়রা বলছিলো এক শতক জমির দাম সেখানে প্রায় চার লক্ষ টাকা। সে হিসাবে দুই শতক জমির মূল্য প্রায় আট লক্ষ টাকা , সাথে দুই লক্ষ ষাট হাজার টাকা মিলিয়ে সোহাগী এখন সাড়ে দশ লক্ষ টাকার সম্পদের মালিক। তিন পুরুষ ধরে ঘরহীন ঘরে থাকার যন্ত্রণা ভুলিয়ে দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোহাগীদের জীবনে আলোর দিশারী হয়ে এলেন। নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের নিজবাড়ি আশ্রয়ন প্রকল্পে সোহাগীরা পেলো জমির মালিকানা । এভাবে লাখো সোহাগীর জীবন বদলে দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।