প্রকাশের তারিখ : ২১ মে ২০২৩

সোনাকুড় ব্রিজ পাড় হতেই চোখে পড়ল কয়েকজন স্কুল ছাত্র বাই সাইকেল চালিয়ে পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে। ওদের কাছে শুনতেই ওরা দেখিয়ে দিল শারীরিক প্রতিবন্ধী রবির চায়ের দোকান। দোকানের কাছে যেতেই কানে ভেসে আসল চায়ের কাপে চামচ দিয়ে নাড়ার টুনটান শব্দ। এই দোকানের পিছনেই রবির সেই স্বপ্নের বাড়ি। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসাবে পাওয়া একটি ঘর, একটি নিজের ঠিকানা বদলে দিয়েছে তার জীবন যাত্রার মান। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘরটি বদলে দিয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধী রবি মোল্যার গোটা জীবন। যেখানে যেখানে স্ত্রী রেশমা বেগম (৩৪), নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া বড় ছেলে শুভ (১৬) ও তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছোট ছেলে সোহান (৮) কে নিয়ে তাদের বসবাস। একটি স্বপ্নের ঠিকানা। মাগুরা শালিখা উপজেলার গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের সোনাকুড় গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী রবির এখন নিজের ঠিকানা আছে। রবির মতোই মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার পেয়েছে স্যাম কুমার বিশ্বাস (৫০) রাজমিস্ত্রি, বিল্ল মঙ্গল দাশ (৪৫), গৌরঙ্গ বিশ্বাস (৩০), রিক্সা চালক সজল কুমার দাশ, সুদেব কুমার বিশ্বাস (৩২), দিনমজুর কমরুল মোল্যা (৪৬) কার্তিক কুমার শিকদার (৫০), বিপ্লব মোল্যা (৩২), হৃদয় দাস (২৫)। তাদেরও এখন নিজেদের বাড়ি আছে, আছে সারাদিন কাজ করার পর মাথা গুজার একটা ঠাঁই। যেখানে ফেলে স্বস্তির নিঃশ্বাস। এক সময় এদের কারেই ছিল না নিজেদের কোন বাড়ি। কিন্তু সবারই আপন ঠিকানা হয়েছে। সোনাকুড় গ্রামের এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪১ শতাংশ জমির উপর ১৩ টি পরিবারের বসবাস করছে। শারীরিক প্রতিবন্ধী রবি মোল্যা জানান, এক সময় ছিলেন ধান পাটের ছোটখাট ব্যবসায়ী। হঠাৎ স্ট্রক করলে জীবনের মাঝ পথে নেমে আসে অন্ধকার। বিপদগ্রস্ত হয়ে অসুস্থ শরীর নিয়ে অসহায়ের মতো পথে পথে ঘুরে বেড়াত। অসুস্থতার জন্য করেতে পারতেন না কাজ। আস্তে আস্তে নেমে আসে অর্থনৈতিক বিপর্যয়। তার উপর ছিল না, মাথা গুজার নির্দিষ্ট কোন ঠিকানা। শুরু হয় দারিদ্রতার সাথে কঠিন সংগ্রাম। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে সরকারি ভাবে ঘর পেয়ে বদলে যায় জীবন যাত্রার মান। এখন সুখে শান্তিতে সেই ঘরে তার স্ত্রী এবং দুই সন্তান নিয়ে ভালোই আছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ির সামনে তার রয়েছে ছোট্ট একটি চা বিস্কুটের দোকান। একই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা হরেন বিশ্বাস (৬৮) বলেন, এক সময় খেয়া ঘাটের নৌকা চলাতেন তিনি। নিজেদের ছিল না কোন ঘর বাড়ি। তবে জীবনের এই পরন্ত বেলায় এসে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী তাদেরকে দিয়েছেন একটি বাড়ি উপহার। আর সেই বাড়িতেই স্ত্রী ছেলে মেয়েদের নিয়ে বসবাস করছেন। এ জন্য ধন্যবাদ জানান মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা কে। তার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেন তারা। শারীরিক প্রতিবন্ধী রবি মোল্যার স্ত্রী রেশমা বেগম বলেন, আমার অসুস্থ স্বামী ও সন্তানদের কে নিয়ে পথে পথে ভেসে বেড়াছিলাম। এখন নিজেদের একটা ঠিকানা হয়েছে। মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ আবু নাসের বেগ বলেন, মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত দেশের প্রথম জেলা হিসেবে মাগুরাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। মাগুরার ৬৭৮টি পরিবারকে ২শতক জমিসহ বাড়ি প্রদান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘর পেয়ে বদলে গেছে শারীরিক প্রতিবন্ধী রবির মতো লাখো মানুষের জীবন। যা এক সময় ছিল স্বপ্ন! তারাও আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তাদেরও হয়েছে নিজেদের আপন ঠিকানা।