
- বিভাগঃ ঢাকা
- জেলাঃ গোপালগঞ্জ
- উপজেলাঃ গোপালগঞ্জ সদর
- পৌরসভা/ইউনিয়নঃ দুর্গাপুর
গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার কোল ঘেষা ১৫ নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত বেদগ্রাম গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর পাচা শেখ এর বসবাস। পাচা শেখ ও কুলছুম বেগম এর ৬ সন্তানের মধ্যে ৫ কন্যা এবং ১ পুত্র। পাচা শেখ পেশায় ছিলেন কৃষক। অভাবের সংসারে ৬ সন্তানকে নিয়ে সামান্য একটু জায়গা নিয়ে বসবাস করতে ছিলেন, সে জায়গা টুকু ৭২-৭৩ সালের বিশ্বরোডের অধিগ্রহণে চলে যায়। তখন থেকেই বাবা আমাদের নিয়ে সরকারী রাস্তার পাশেই থাকতেন। দিপালীর বয়স যখন ৭/৮ বছর তখন দিপালীর বাবা মারা যায়। দিপালীর বাবাই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলো। বাবা মারা যাওয়ায় সংসার অভাবের মধ্যে চলতে থাকে, দিপালী ৫ বোনের মধ্যে সবার ছোট। বড় বোন ও মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোন মতে দিপালীকে বড় করে। দিপালী প্রাইমারী স্কুলেও কখনো যেতে পারেনি। দিপালীর যখন ১৩ বছর বয়স তখন তাকে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। পাশের গ্রামে গেটপাড়ায় দিন মজুর পান্নু শেখের সাথে, পান্নু শেখ এরও কোন জায়গা জমি ছিলোনা। বিয়ের পর ছোট একটা ভাড়া বাসায় দিপালীকে নিয়ে সুখের আশায় বসবাস করতে লাগলেন। কিন্তু সুখ দিপালীর কপালে জোটেনি। কারণ স্বামী চেয়েছিলো বিয়ের পরে শ্বশুর বাড়ি হতে যৌতুক পাবে কিন্তু তা সে পায়নি সে কারণে স্বামী প্রাই নির্যাতন করত। স্বামী নিয়মিত কাজ করতোনা, সংসার কোন মতে অনাহারে অর্ধাহারে চলতে থাকে। দিপালী বলেন আমার স্বামী বিভিন্ন নেশায় আসক্ত থাকত এবং নেশাগ্রস্থ থাকায় আমাকে প্রায়ই মারধর করত। এভাবে চলতে চলতে আমাদের সংসারে পাঁচটি সস্তান হয়। যাহার কারণে সংসারে অভাব খুব বেড়ে যায়। সংসার বড় হওয়ায় ছেলে মেয়ে নিয়ে চলতে খুব কষ্টের মধ্য দিয়েই দিন পার করতেছিলো দিপালী। এমন সময় হঠাৎ লোক মুখে জানতে পারে সরকার মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের দুই শতক জায়গাসহ ঘর দেবে। এই শুনে দিপালী দুর্গাপুর ভূমি অফিসের তহশিলদারের সাহেবের নিকট যায়। তখন থেকেই দিপালী বুঝতে পারে তাদের মত যারা অসহায় আছে তাদেরকে সরকার জমিসহ ঘর দেবে। দিপালী বলেন, “তহশিলদার সাহেব আমাকে কিছু কাগজপত্র আনতে বলে, আমাকে একটা আবেদন করে দেয়। এর পরে আমার আমার করুণ ও অসহায় অবস্থা থেকে আমাকে মুক্তি দিয়ে আমাদের দুইশতক জায়গাসহ একটি সুন্দর পাকা ঘর দেয়। ঘরটি পেয়ে আমি ভীষণ খুশি হই। আমার এখন বাসা ভাড়া নিয়ে কোন দুশ্চিন্তাও করতে হয়না। ঘরটি পাওয়ার পর আমার স্বামী আমাকে এখন কোন নির্যাতন করেনা।” দিপালী এখন মুজিববর্ষের ঘর উপহার পেয়ে সুখে শান্তিতেই বসবাস করছে। ঘরটি পাওয়ার পর দিপালীর আর কোন দুঃখ-কষ্ট নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ যারা দিপালীকে ঘরটি দিয়ে স্থায়ীভাবে ঠিকানা করে দিয়েছে আল্লাহ যেন তাদেরকে সুখে শান্তিতে রাখে, আল্লাহর কাছে প্রতিদিন নামাজ পড়ে এই দোয়াই করে।