• বিভাগঃ ঢাকা
  • জেলাঃ গোপালগঞ্জ
  • উপজেলাঃ গোপালগঞ্জ সদর
  • পৌরসভা/ইউনিয়নঃ চন্দ্রদিঘলিয়া

গোপালগঞ্জ জেলা শহর হতে ৩০ কিঃ মিঃ উত্তরে অবস্থিত চামটা গ্রাম । এই গ্রামে গড়ে উঠেছে  একটি আশ্রয়ণ প্রকল্প যা প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া মুজিববর্ষে বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এই আশ্রয়ণে  আশ্রয় হয় দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের। এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের জায়গায় আশ্রয় পাওয়া একজন গৃহহীন ও ভূমিহীন  হলেন আমেনা বেগম। ছন্নছাড়া জীবন যাপন করছিলেন আমেনা বেগম। প্রতিবন্ধী এক সন্তান রাব্বিসহ আর চার সন্তানকে নিয়ে তার সংসার। আমেনা বেগমের পিতার নাম আলিমুদ্দিন। প্রতিবন্ধী সন্তান জন্ম দেওয়ার কারণে স্বামী পরিবার সবার কাছে আজ অবহেলিত। অন্য ছেলেরা প্রতিবন্ধী ছেলেকে মেনে নিলেও পুত্রবধূরা তাকে মেনে নিতে পারেনি। তাই স্বামী সন্তানদের ছেড়ে প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে আমেনা বেগম যাযাবর জীবন যাপন করতে থাকে। সবাই ছেড়ে গেলেও মা তো সন্তানকে ফেলে দিতে পারেনা। সন্তান যেমনই হোক না কেন। প্রতিবন্ধী রাব্বিকে নিয়ে কখনও রাস্তার পাশে, কখনও অন্যের জায়গায় বসবাস করতে থাকে সে। জীবনে দুঃখের পর আরও যেন দুঃখ বাড়তে থাকে। সংসার থাকলেও সংসারে ছিলনা তার সুখ। সব সময় অনিশ্চয়তা তাকে তাড়া করে ফেরে কোথায় পাবে স্থায়ী বসবাসের ঠিকানা। সকল প্রকার বাঁচার চিন্তা তাকে একাই করতে হয়। এমন এক পরিস্থিতিতে সে একদিন লোকমুখে শুনতে পারে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে জমি ও ঘর প্রদান করেন। সে উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে তার সমস্যার কথা বলে। অফিস থেকে তার জন্য একটি আবেদন করে দেয়। এর কিছুদিন পর ভূমি অফিস থেকে কয়েকজন লোক এসে তার সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয় এবং এর কিছুদিন পরে জানতে পারে তার নামে মুজিববর্ষ উপলক্ষে নির্মিত চামটা আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর বরাদ্দ হয়েছে, সেই সাথে দুই শতাংশ জমি। আমেনা বেগম নিজের ঘরে ওঠে। দুই শতাংশ জমিসহ একটি  ঘর আজ তার নিজের নামে দলিল রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। সে মনে করে এতদিনে একটি  স্থায়ী ঘর তার হলো বসবাসের জন্য। এখন থেকে কেউ আর ছেড়ে যেতে বলবেনা। কারো চোখ রাঙানি তাকে দেখতে হবে না। পিছনের সব কষ্ট সে ভুলে যায়। প্রধানমন্ত্রীর এই অসামান্য উপহার পেয়ে সে আবেগে আপ্লুত। তার কষ্ট ও শোকগুলো যেন শক্তিতে পরিণত হয়েছে। আমেনা বেগমের জীবনের মোড় ঘুরে যায় এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য তার যাযাবর জীবনের অবসান হয়। এই একখন্ড জমি ও একটি ঘর যেন তাকে বাঁচার স্বপ্ন দেখায় । সে তার প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে যেন বাঁচার নতুন স্বপ্ন দেখে। ভবিষ্যতে সে তার  প্রতিবন্ধী সন্তানকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাতে বিছানায় ঘুমাতে গিয়ে সে ভাবে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার, তাকে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছে, তার জীবনকে বদলে দিয়েছে। সে মনে মনে ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের গরিব অসহায় লোকদের কথা অনেক ভাবেন ।